প্রাকৃতিক কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেলেন ঈশ্বরদীর ৩০ কৃষক » Itihas24.com
ঈশ্বরদী১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
ঈশ্বরদীর সবশেষ নিউজ । ইতিহাস টুয়েন্টিফোর

প্রাকৃতিক কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেলেন ঈশ্বরদীর ৩০ কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪ ৭:৪০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

শিমচাষে কীটনাশকের অত্যধিক ব্যবহার নিয়ে জাগো নিউজে প্রতিবেদন প্রকাশের পর জৈবসার, জৈব কীটনাশক উৎপাদন ও ব্যবহার করে সবজিসহ নিরাপদ খাদ্য শস্য উৎপাদনে প্রাকৃতিক কৃষি বিষয়ে পুনঃপ্রশিক্ষণ পেলেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ৩০ কৃষক।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) উদ্যোগে সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের ব্র্যাক লানিং সেন্টার মিলনায়তনে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
বেলার রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়কারী তন্ময় কুমার স্যানাল জাগো নিউজকে জানান, জাগো নিউজে প্রকাশিত ‘শুধু ঈশ্বরদীতেই শিমচাষে ৭ কোটি টাকার কীটনাশক ব্যবহার-’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি বেলা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। ফসলে রাসায়নিক কীটনাশকের অধিক ব্যবহার মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই কৃষিতে রাসায়নিক কীটনাশক ও সার ব্যবহারের পরিবর্তে কৃষকরা জৈবসার ও জৈব কীটনাশক উৎপাদন এবং ব্যবহার করলে তা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত নিরাপদ। জৈবসার ও কীটনাশক উৎপাদন করে তা কৃষিকাজে ব্যবহার করে বিষমুক্ত নিরাপদ ফসল উৎপাদনে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করতে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
বেলার প্রধান কার্যালয়ের প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী এ এম এম মামুন বলেন, রাসায়নিক সার- কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটির উবর্বতা শক্তি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। অতিরিক্ত সার-কীটনাশক ব্যবহার করে উৎপাদিত খাদ্য শস্য মানবদেহের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি। প্রাকৃতিকভাবে জৈব সার-বালাইনাশক উৎপাদন করে নিরাপদ বিষমুক্ত ফসল ফলানো যায় এ বিষয়ে কৃষকদের ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। প্রাকৃতিক কৃষি বা নিরাপদ কৃষি গড়ে তুলতে হলে অবশ্যই রাসায়নিক সার-কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে কৃষকরাও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।
উপজেলার বাঘহাছলা গ্রামের শিমচাষি এনামুল হক এলিন বলেন, জৈবসার ও জৈববালাইনাশক ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন কৃষকদের ফসল উৎপাদনের খরচ কম হয় অন্যদিকে বিষাক্ত রাসায়নিক কীটনাশকমুক্ত সবজি উৎপাদন করে ভোক্তাদের খাওয়াতে পেরে নিজের কাছেও স্বস্তিবোধ হয়।
প্রশিক্ষণ শেষে ঈশ্বরদীর মুলাডুলির কৃষক শরিফুল হক বলেন, এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পেরেছি কিভাবে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করা যায়। আগামীতে আমরা প্রাকৃতিক পদ্ধতিে জৈব সার ব্যবহার করে সবজির আবাদ করতে পারবো। যাতে জমি ও পরিবেশ দুটোই নিরাপদ থাকে।
দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অতিথি ছিলেন পাবনা সদর উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবীব। কৃষকদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেন মানিকগঞ্জের প্রাকৃতিক কৃষি কেন্দ্রের গবেষক ইফতেখার আলী ও ঢাকা মোহাম্মদপুরের প্রাকৃতিক বিপনন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ও প্রশিক্ষক আফিয়া আজিজ।
২০২৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জাগো নিউজে ‘শুধু ঈশ্বরদীতেই শিমচাষে ৭ কোটি টাকার কীটনাশক ব্যবহার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় ২৬ বছর ধরে শিমের বাণিজ্যিক আবাদ হয়। এ উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া, ফরিদপুর, আটঘরিয়া, বাঘহাছলা ও শেখপাড়া গ্রামে সবচেয়ে বেশি শিমের চাষ হয়। এখানকার ৯০ শতাংশ জমিতেই কৃষকরা শিমচাষ করেন।
তবে শিমের মৌসুম এলেই এখানকার গ্রামের বাতাসে ভেসে বেড়ায় কীটনাশকের গন্ধ। প্রতিবিঘা জমিতে কৃষকরা শিম আবাদে ৮-৯ হাজার টাকার কীটনাশক ব্যবহার করেন, যা অন্য কোনো আবাদে হয় না।

বিজ্ঞাপন

BONOLOTA IT POS ads